
উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ধরনের স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে, যা তাদের উচ্চশিক্ষার পথে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য স্কলারশিপের তালিকা দেওয়া হলো:
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্কলারশিপ:
* স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম-মিনস স্কলারশিপ (SVMCM / বিকাশ ভবন স্কলারশিপ):
এটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় ও উচ্চ আর্থিক সহায়তাকারী স্কলারশিপ। মেধাবী এবং আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল (সাধারণত ৬০-৭৫% নম্বর) করলে এবং নির্দিষ্ট আয়ের সীমার মধ্যে থাকলে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়। কোর্সের প্রকারভেদে প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা থেকে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
* নবান্ন স্কলারশিপ (মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল):
এটিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি স্কলারশিপ, যা মেধাবী ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য। এই স্কলারশিপের জন্য সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০-৬৫% নম্বর প্রয়োজন হয় এবং পারিবারিক আয় নির্দিষ্ট সীমার নিচে হতে হয়।

* ওয়েসিস স্কলারশিপ (OASIS Scholarship): এই স্কলারশিপটি মূলত পশ্চিমবঙ্গের SC, ST এবং OBC ক্যাটাগরির শিক্ষার্থীদের জন্য। উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর যারা সরকারি বা সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে, তারা এর জন্য আবেদন করতে পারে।
* ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ (Aikyashree Scholarship): এটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি) শিক্ষার্থীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি স্কলারশিপ। এটি মাধ্যমিকের পর যেকোনো স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া হয়।
* কন্যাশ্রী প্রকল্প (Kanyashree Prakalpa): যদিও এটি সরাসরি উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর স্কলারশিপ নয়, তবে এটি মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য একটি আর্থিক সহায়তা প্রকল্প যা উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত প্রযোজ্য।

কেন্দ্রীয় সরকারের স্কলারশিপ:
* প্রধানমন্ত্রী উচ্চতর শিক্ষা প্রোৎসাহন (PM-USP) কেন্দ্রীয় সেক্টর স্কিম অফ স্কলারশিপ ফর কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস: এই স্কলারশিপটি উচ্চ মাধ্যমিক/দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাবী এবং আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রদান করে। স্নাতক স্তরে প্রতি বছর ₹১২,০০০ এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ₹২০,০০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
* ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল (NSP): কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত অসংখ্য স্কলারশিপের জন্য এই পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে: * পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ স্কিম ফর মাইনরিটিজ * পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ ফর স্টুডেন্টস উইথ ডিস্যাবিলিটিস . সেন্ট্রাল সেক্টর স্কিম অফ স্কলারশিপ ফর কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস
* ইনস্পায়ার স্কলারশিপ (INSPIRE Scholarship): বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক (Department of Science & Technology) দ্বারা প্রদত্ত এই স্কলারশিপটি বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য।
* কিশোর বৈজ্ঞানিক প্রোৎসাহন যোজনা (KVPY): এটিও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক দ্বারা পরিচালিত একটি ফেলোশিপ প্রোগ্রাম, যা বিজ্ঞান গবেষণায় আগ্রহীদের জন্য।
বেসরকারি ও অন্যান্য স্কলারশিপ:
* জিপি বিড়লা স্কলারশিপ (GP Birla Scholarship): এটি মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বেসরকারি স্কলারশিপ।
* বিজ্ঞানী কন্যা মেধা বৃত্তি স্কলারশিপ (Bigyani Kanya Medha Britti Scholarship): জগদীশ চন্দ্র বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ (JBNSTS) দ্বারা প্রদত্ত এই স্কলারশিপটি বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য।

* বিভিন্ন ব্যাংক ও ফাউন্ডেশন প্রদত্ত স্কলারশিপ:
যেমন – HDFC Bank ECSS Scholarship, বিদ্যাধন স্কলারশিপ (সারোজিনী দামোদরন ফাউন্ডেশন), ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ (বর্তমানে অ্যাচিভ নেক্সট স্কলারশিপ), ইত্যাদি।আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় সাধারণ বিষয়াবলী: * উচ্চ মাধ্যমিকে নির্দিষ্ট শতাংশ নম্বর। * পারিবারিক আয়ের নির্দিষ্ট সীমা।
* আবেদনকারীরDomicile সার্টিফিকেট। * জাতীয়তা (যদি প্রযোজ্য হয়)। * নির্দিষ্ট কোর্সে ভর্তি হওয়া।গুরুত্বপূর্ণ টিপস: * প্রতিটি স্কলারশিপের জন্য যোগ্যতা, আবেদনের সময়সীমা এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র ভিন্ন হতে পারে। * আবেদনের আগে প্রতিটি স্কলারশিপের বিস্তারিত নির্দেশিকা ভালোভাবে পড়ে নিন। * বিভিন্ন স্কলারশিপ পোর্টাল (যেমন – Swami Vivekananda Scholarship Portal, OASIS Portal, National Scholarship Portal, Buddy4Study, ইত্যাদি) নিয়মিত ভিজিট করুন আপডেটেড তথ্যের জন্য। * আপনার বিদ্যালয় বা কলেজের সাথে যোগাযোগ করে স্কলারশিপ সম্পর্কে তথ্য জানতে পারেন।আশা করি এই তথ্যটি আপনার উপকারে আসবে।