আপনি কি কর্মক্ষেত্রে আপনার মনোযোগ বাড়াতে চাইছেন? এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলো যা আপনাকে কাজে আরও মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে
কিভাবে কোন কাজে মনোযোগ দেবেন, কাজে মনোযোগ দিতে হলে কি কি করতে হবে? How to concentrate on work?
আপনি কি কর্মক্ষেত্রে আপনার মনোযোগ বাড়াতে চাইছেন? এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলো যা আপনাকে কাজে আরও মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে:
১. বিভ্রান্তি দূর করুন * ফোন সাইলেন্ট করুন: আপনার মোবাইল ফোন সাইলেন্ট মোডে রাখুন এবং নোটিফিকেশন বন্ধ করুন। যদি সম্ভব হয়, কাজ করার সময় ফোন দূরে রাখুন। * নোটিফিকেশন বন্ধ করুন: কম্পিউটার বা ল্যাপটপের অযাচিত নোটিফিকেশন (যেমন ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া) বন্ধ রাখুন। * কর্মক্ষেত্র গোছানো রাখুন: আপনার কাজের জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং গোছানো রাখুন। অগোছালো পরিবেশ মনোযোগ নষ্ট করতে পারে।
২. কাজের পরিকল্পনা করুন * দিনের শুরুতেই কাজের তালিকা তৈরি করুন: আপনার দিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো একটি তালিকা আকারে লিখে নিন। * অগ্রাধিকার ঠিক করুন: কোন কাজগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আগে করা দরকার, তা চিহ্নিত করুন। * ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন: বড় কাজগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন। এতে কাজগুলো কম ভীতিজনক মনে হবে এবং শুরু করা সহজ হবে।

৩. বিরতি নিন * পমোডোরো টেকনিক ব্যবহার করুন: ২৫ মিনিট কাজ করুন এবং ৫ মিনিটের জন্য বিরতি নিন। প্রতি ৪টি পমোডোরো সেশনের পর একটি দীর্ঘ বিরতি (১৫-৩০ মিনিট) নিন। * কাজের মাঝে হাঁটুন: দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে না থেকে মাঝে মাঝে হেঁটে আসুন বা হালকা ব্যায়াম করুন। * চোখের বিশ্রাম দিন: দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের উপর চাপ পড়ে। প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে কোনো কিছুর দিকে তাকান।

৪. মনঃসংযোগের অনুশীলন করুন * মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন: প্রতিদিন কিছুক্ষণের জন্য মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন করুন। এটি আপনার মনকে বর্তমান মুহূর্তে স্থির রাখতে সাহায্য করবে। * একক কাজ: মাল্টিটাস্কিং এড়িয়ে চলুন। একবারে একটি কাজ করুন এবং সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন।

৫. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখুন * পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত ঘুম মনোযোগ এবং উৎপাদনশীলতার জন্য অপরিহার্য। * সুষম খাবার: স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার গ্রহণ করুন। জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন। * নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম আপনার মানসিক সতেজতা এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার কাজে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন এবং আপনার উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারবেন। আপনার জন্য কোনটি সবচেয়ে কার্যকর, তা খুঁজে বের করতে বিভিন্ন পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

অকারণে সময় নষ্ট হচ্ছে? তাহলে আজ থেকেই 5 সেকেন্ড রুল অনুসরণ করুন।5 সেকেন্ড রুল কি?কোনো কাজ শুরু করার আগে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আপনার কাছে মাত্র ৫ সেকেন্ড সময় থাকে! বাস্তবে আমাদের ব্রেন খুব কমফোর্টেবল জোনে থাকতে চায়। আমরা যাতে রিলাক্সে থাকি, আনন্দ ফুর্তি করি, তার জন্য ব্রেন আমাদের সারাক্ষণ প্ররোচিত করে। আমরা যখন বিশ্রাম করি, কিংবা যখনই মজার খাবার খাই বা ফানি ভিডিও দেখি, তখন ব্রেনে ডুপামিন নামক কেমিক্যাল রিলিজ হয়। ফলে আমাদের মধ্যে একটা আরামদায়ক অনুভূতি তৈরি হয়।এই অবস্থা থেকে বের হবার জন্য আপনার কিছুটা এক্টিভ এনার্জির প্রয়োজন হয়, যেটা আপনাকে তখনই কাজ শুরু করতে বাধ্য করবে। কিন্তু আপনার ব্রেন চায় না আপনি ওই এনার্জিটা খরচ করেন। তাই, কাজটি না করার জন্য ব্রেন অসংখ্য অজুহাত তৈরি করে, কাজ করার সময় কি কি সমস্যা হতে পারে তা বড় করে দেখায়।

তত্ত্বটি দিয়েছেন মার্কিন লেখক মেল রবিনস।ব্রেনের এই অজুহাত বন্ধ করার জন্য ৫ সেকেন্ডের জন্য সচেতন হয়ে যান। নিজেকে বলুন, “ইয়েস, এক্ষুণি এই মুহূর্তে আমি এটা করবো।” কোনো কাজ যদি ৫ সেকেন্ডের মধ্যে শুরু না করেন, তাহলে আপনার ব্রেন আপনার সাথে ট্রিকস্ খেলতে শুরু করবে। আপনার মনে হবে, ঠিক আছে, আর দশ মিনিট যাক, সময় তো আর চলে যাচ্ছে না! এতে দেখা যায় আপনি দশ মিনিটের বদলে এক ঘন্টা সময় পার করে দিয়েছেন, কিন্তু কাজ শুরু করতে পারেননি। ধরুন, আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন, আজ থেকে প্রতিদিন ১ ঘন্টা করে হাঁটবেন। ভোরে যখন আপনার ঘুম ভাঙল আপনি ভাবলেন, একটু পরেই না হয় বের হই, সকালে না হেঁটে বিকেলে হাঁটলেও তো অসুবিধা নেই! আমি নিশ্চিত থাকুন, বিকেলেও আপনার ব্রেন কোনো না কোনো অজুহাত তৈরি করবেই। এর থেকে মুক্তির সহজ উপায় হচ্ছে ঘুম ভেঙে যাওয়ার ৫ সেকেন্ডের মধ্যে হাঁটতে বেরিয়ে যাওয়া।সারাদিনে আপনার সামনে এরকম অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে এক্টিভ এনার্জি প্রয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে। সেজন্য কোনো কাজ করতে সিদ্ধান্ত নেবার ৫ সেকেন্ডের মধ্যে কাজটি শুরু করে দিন। যদি আপনি এটা বার বার করতে থাকেন, তখন এটা আপনার অভ্যাসে পরিণত হবে। ভুলবেন না, আপনার সাফল্য অর্জনের পথে অলসতাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বাধা।